সোলায়মান,টাংগাইল প্রতিনিধি- সারাদেশব্যপী প্রখর রোদ ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার জনজীবন তীব্র গরমে অতিষ্ঠ। রোদে পুড়ছে প্রকৃতি, বইছে তাপ প্রবাহ, স্বস্তি নেই কোথাও।
জনজীবনে কাহিল অবস্থা। দুপুরের রোদে খোলা আকাশের নিচে হাঁটলে গরম বাতাসের হলকায় মুখমন্ডল পুড়ে যাওয়ার উপক্রম। সূর্য এতটাই প্রখর যে, বাইরে বের হলেই মনে হচ্ছে অগ্নিকুন্ড। একটু প্রশান্তি ও শরীরকে সতেজ রাখার জন্য মানুষ ছুটছেন গাছের ছায়া, কিংবা পুকুর পাড়। এছাড়াও গরমের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে শিশুরা পুকুর কিংবা নদীর পানিতে পার করছে সময়। শুধু দিনের বেলাতেই নয়, রাতেও গরমে মানুষ ঘুমাতে পারছে না কারন প্রচুর লোডশেডিং আর বৈদ্যুতিক পাখাও হার মানছে এই তীব্র গরমের কাছে।
শনিবার (১৬ জুলাই), নাগরপুরের বিভিন্ন এলাকায় এমন চিত্র দেখা যায়। ভ্যাপসা গরমে অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ছে কর্মজীবী ও বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ। এতে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা আর এই তীব্র রোদে মানুষের মুখে দেখাচ্ছে মলিনতার ছাপ।
গাছের ছায়া আর পুকুর পাড়ে বসে থাকা কয়েকজন দিনমজুর বলেন, ‘অতিরিক্ত গরমে কাজে মন বসছে না আর
দুপুরের কড়া রোদ আর সহ্য হচ্ছে না, তাই কাজের ফাঁকে গাছের নিচে আশ্রয় নিচ্ছি।
কৃষক আব্দুল রহিম বলেন, তীব্র গরমের মাঝে ফসল কাটতে যেয়ে অবস্থা একেবারে নাজেহাল। বার বার ঠান্ডা পানি আর লেবুর শরবত পান করলেও স্বস্তি মিলছে না।
এই অতিরিক্ত গরমে নাগরপুরের জনজীবন যেন গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে ফলে দেখা দিচ্ছে জ্বর, সর্দি, কাশির প্রাদুর্ভাব। এ বিষয়ে ডা.এম এ মান্নান জানান, বিগত কয়েকদিনে গরমের কারণে বেশি অসুস্থ হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
এদিকে তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় চাহিদা বেড়েছে ঠান্ডা পানীয়’র। ফুটপাতে প্রচুর পরিমানে বিক্রি হচ্ছে আখেঁর রস ও বিভিন্ন ফলমূলের সাথে লেবুর শরবত।
সদর বাজারের রিক্সা চালক বলেন, কয়েকদিন যাবত প্রচন্ড গরম ও তাপমাত্রা বেশী হওয়ায় কাজে বের হয়েও যাত্রী কম পাই, ফলে আমাদের ইনকাম কম হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-টাংগাইলসহ রাজশাহী, সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আগামী কয়েকদিন এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়াও বায়ু মন্ডলে জলীয় বাষ্প বেশি ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় গরম এতো বেশি অনুভূত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবীদরা।
প্রখর গরম ও স্বাস্থ্য বিষযে মুক্তাদির হোমিও চিকিৎসা কেন্দ্রের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড.এম এ মান্নান ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, গরমে শরীর ঠান্ডা রাখার জন্য পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের প্রতি অধিক মনোযোগী হতে হবে কারণ কিছু খাবার আছে যা আমাদের শরীর ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। বেশী গরমে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও লবণের অনেকটাই বের হয়ে যায়। অনেক সময় দেখা দেয় পানি শূন্যতা। এছাড়াও গরমে ডায়েরিয়া, হিটস্ট্রোক ইত্যাদি রোগ সমুহ হতে পারে। এসময় অতিরিক্ত মশলাদার খাবার, তৈলাক্ত খাবার পরিহার করে পুদিনা পাতা, তরমুজ, শসা, দই, পানি, শকাসবজি এ সমস্ত খাবার বেশী বেশী খেতে হবে।এছাড়াও করোনা প্রভাব আবার দেখা যাচ্ছে এজন্য সকলকেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।